জুমার দিনে যে সূরা ‘সূরা আল কাহাফ’ করলে ঈমানের নুর চমকায়
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৮ AM

জুমার দিনে যে সূরা ‘সূরা আল কাহাফ’ করলে ঈমানের নুর চমকায়

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫/০৮/২০২৫ ০৯:৩৩:৩৩ AM

জুমার দিনে যে সূরা ‘সূরা আল কাহাফ’ করলে ঈমানের নুর চমকায়


‘সূরা আল কাহাফ’ পবিত্র কোরআনুল কারিমের ১৮ নম্বর সূরা। ১৫ পারায় এ সূরাটির আয়াত সংখ্যা ১১০টি এবং রুকুর সংখ্যা ১১টি। সূরা আল কাহাফ মক্কায় অবতীর্ণ হয়। কাহাফ শব্দের অর্থ গুহা।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও হজরত খিজির আলাইহিস সালামের ঘটনাসহ কুরাইশদের ৩টি প্রশ্ন এবং ৩টি উত্তরের কথা এ সূরায়  মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করেছেন।

গুহাবাসী ৭ যুবকসহ মোট ৩টি ঘটনার উল্লেখ আছে এ সূরায়। আসহাবে কাহাফ বা  যুবক এবং একটি কুকুরের হৃদয়গ্রাহী ঘটনা বর্ণনা আছে এতে। যারা ঈমান রক্ষার জন্য নিজেদের আবাস ছেড়ে কোনো এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে তারা ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে কাটান। এর পর মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার কুদরতে তারা আবার জাগ্রত হন। ৩০৯ বছর আগে যেখানে অত্যাচারী শাসক ছিল, ৩০৯ বছর পর তারা মহান আল্লাহর দ্বীনের ওপর অবিচল আর এক বাদশাহকে পেল।

মহান আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের দ্বীন নিয়ে পরীক্ষা করেন এবং দুনিয়ার জীবনে যেকোনো সমস্যায় সাহায্য করে থাকেন তা এ সূরার উল্লেখিত ঘটনাসমূহে স্পষ্ট।  

মহান আল্লাহ তাআলার সঙ্গে নাফরমানী করার পরিণাম দুনিয়ায় ও আখিরাতে ভোগ করতে হবে এবং মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সম্পদের ব্যাপারেও পরীক্ষা নেন। এ সূরায় ২ জন বন্ধুর কথা উল্লেখ আছে যাদের মধ্যে একজনের ২টি বাগান ছিল। সে বাগানগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফল ও ফসল হত। স্ত্রী ও সন্তান সন্ততি নিয়ে সে বেশ সম্পদশালী ছিল। নাফরমানী ও অকৃতজ্ঞতার কারণে তাকে সম্পদ হারাতে হয় এবং এ ঘটনা ছিল সম্পদের পরীক্ষা।

এতে বর্ণিত আছে, হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও হজরত খিজির আলাইহিস সালাম এর হিকমাহ ও ইলমের পরীক্ষা। ইয়াজুজ-মাজুজের ঘটনা বর্ণিত আছে। পবিত্র জুমার দিনে (বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ) সূরা আল কাহাফ পড়া সুন্নত।

এই সূরা প্রথম ১০ আয়াত অথবা শেষ ১০ আয়াত মুখস্ত রাখলে দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচা যাবে। তাফসির ইবনে কাসির থেকে জানা যায়, সূরা আল কাহাফ থেকে ইনশা আল্লাহ বলার গুরুত্ব জানা যায়। যুল কারনাইন একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ; তার ঘটনা জানা যায় এ সূরাটিতে।

মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা আল কাহাফ পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নুর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দেবে। আর যে ব্যক্তি উহার শেষ ১০টি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও সে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না’। (সিলসিলায়ে সহিহাহ: ২৬৫১)

হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যাক্তি পবিত্র জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পাঠ করবে, সে আগামী ৮ দিন পর্যন্ত সমস্ত ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবেন। দাজ্জাল বের হলেও দাজ্জালের ফেতনা থেকে ও মুক্ত থাকবেন।

হজরত আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা আল কাহাফ পড়বে তার ঈমানের নুর এক জুমা থেকে অন্য জুমা পর্যন্ত চমকিতে থাকবে। (সুনানে বায়হাকী-দাওয়াতে কবীর)

হজরত বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি সূরা আল কাহাফ তেলওয়াত করেন। পাশে একটি ঘোড়া ২টি রশি দ্বারা বাধা ছিলো। এসময় এক খণ্ড মেঘ তাকে ঢেকে নিলো  এবং তা ধীরে ধীরে কাছে আসতে লাগলো আর ঘোড়াটি লাফাতে লাগলো। ভোরে উঠে লোকটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে ঘটনাটি বলেন। রাসূলুল্লাহ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা ছিলো রহমত যা পবিত্র আল-কোরআনের কারণে নেমে এসেছিলো। (সহিহ আল বুখারি ও সহিহ মুসলিম)

আজকের সিলেট/ডি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর