
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কের সংস্কারকাজ গত ১০ বছরেও শেষ হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাসে সড়কের দুই কিলোমিটার অংশে সংস্কারকাজ শুরু হলেও আংশিক কাজ করে কাজ ফেলে রেখে চলে যান ঠিকাদার। সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের একাংশ এখন কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে উপজেলার লাখো মানুষ।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর ১৫ কিলোমিটার অংশের জন্য ২০০৫ সালে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সড়কের কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে উপজেলার পাইলগাঁও, আশারকান্দি ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের একাংশের মানুষের যাতায়াতে প্রসার ঘটে। তবে ২০১৪ সাল থেকে সড়কটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে ২০১৬ সালে সড়কের ১১ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে কাজ শুরু হয়। তবে যৎসামান্য কাজ করে ঠিকাদার পালিয়ে যান। এর মধ্যে ২০২২ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সড়কটি বিধ্বস্ত হয়। সড়কটি সংস্কারের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা, পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিলেও সুরাহা হয়নি। এদিকে, সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার আগেই বর্তমানে সড়কের কাতিয়া গ্রামের পূর্ব থেকে ফেচিরবাজারের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত সড়কটি কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকাবাসী।
পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নজুমদ্দীন বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙন থেকে সড়কটি রক্ষা করতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করি। পরে কর্তৃপক্ষও লিখিতভাবে জরুরিভিত্তিতে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন।
জগন্নাথপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙনরোধে ওই এলাকায় আমাদের একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নতুন করে আরও ভাঙন দেখা দেয়ায় ওই এলাকায় ৬০০ মিটারের নতুন প্রকল্প অনুমোদন করে টেন্ডার করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন বলেন, সড়কটির সংস্কারকাজ নিয়ে ঠিকাদারদের ভূমিকায় আমরা হতাশ। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। সড়কের শিবগঞ্জ থেকে বিএন উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত সংস্কারকাজের জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে নতুন আবেদন করা হয়েছে। আর নদীভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখছে।
আজকের সিলেট/ডি/এসটি
