
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিলেও গরমের তীব্রতা কমেনি। গরমের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগের ভেলকিবাজি। গতকাল বুধবার দিনভর ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে নগরীর জনজীবন। চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুত না পাওয়ায় এমন সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুত সরবরাহ কম পাওয়ায় লোডশেডিং বেশি করতে হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানী খাতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের লুটপাটের ফল ভোগ করতে হচ্ছে দেশবাসীকে। টেকসই জ্বালানী পদ্ধতিতে না গিয়ে কুইক রেন্টাল পদ্ধতি বেছে নেওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
নগরবাসী বলছেন, বুধবার গরমের সঙ্গে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত ছিল জনজীবন। ব্যবসা বাণিজ্যেও প্রভাব পড়েছে এই লোডশেডিং। সিলেটে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন নগরবাসী।
বিদ্যুত বিভাগের সূত্র জানায়, বুধবার সিলেটে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৯০ মেগাওয়াট। সরবরাহ করা হয়েছে ১২১ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৬৯ মেগাওয়াট। ফলে বিভিন্ন এলাকায় অনেক বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে। এই অবস্থা আরও দুই তিন চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বুধবার ভোর থেকেই এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং শুরু করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সিলেট। বুধবার ভোর ৪টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নগরীর মেজরটিলা এলাকায় লোডশেডিং করা হয়। দীর্ঘ সময় বিদ্যুত না থাকায় রান্না গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হিমশিম খেতে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। একই ভাবে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা ও উপশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং চলে। এমনকি সন্ধ্যার পরও লোডশেডিং হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে বন্দরবাজার এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য ও অফিস আদালতে বড় প্রভাব পড়ে। চরম ভোগান্তি পোহান পুরো নগরীর বাসিন্দারা।
তথ্য বলছে, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বিদ্যুত কেন্দ্রে দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হয়। আর পুরো বিভাগের বিদ্যুতের চাহিদা ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট। এসব বিদ্যুত জাতীয় গ্রীডের মাধ্যমে অন্য অঞ্চলে চলে যায়। চাহিদার দ্বিগুণেরও বেশি বিদ্যুত উৎপাদন করা হলেও সিলেটে চাহিদার কম বিদ্যুত দিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
নগরীর বাসিন্দা বিলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটবাসীর প্রতি এরকম বৈষম্য বন্ধ করতে হবে। সিলেটে সর্বনিম্ন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে হবে। অবিলম্বে সিলেটে বিদ্যুত সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট পিডিবির প্রধান প্রকৌশল আব্দুল কাদির বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। জাতীয় গ্রীড থেকে বুধবার সিলেটে ১২১ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। ঘাটতি ছিল ৬৯ মেগাওয়াট। সেটা পূরণ করতে গিয়ে লোডশেডিং করতে হয়। লোডশেডিং ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় পিডিবির প্রধান কার্যালয় থেকে। এখানে স্থানীয় কার্যালয়ের কিছু করার থাকে না। তিনি বলেন, গরম বেশি থাকায় চাহিদাও বেশি ছিল। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম ছিল। গরম কমে আসলে অবস্থান উন্নতি হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আজকের সিলেট/এপি
