মৃত মা বাবার জন্য যেভাবে ইস্তেগফার করবেন
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৬ AM

মৃত মা বাবার জন্য যেভাবে ইস্তেগফার করবেন

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮/০৯/২০২৫ ০৯:১৩:২০ PM

মৃত মা বাবার জন্য যেভাবে ইস্তেগফার করবেন


মুসলিম হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, মৃত্যুর পরও মা-বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক অব্যাহত থাকে। সন্তানের দোয়া ও ইস্তেগফার মৃত মা-বাবার জন্য সওয়াবের উৎস। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল কখনো বন্ধ হয় না। ১. সাদকায়ে জারিয়া (এমন দান-অনুদান; যার সওয়াব চলমান থাকে) ২. এমন জ্ঞান, যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং ৩. নেক সন্তান, যে তার মৃত বাবা মায়ের জন্য সবসময় দোয়া এবং আমল করে।’ (আবু দাউদ: ২৮৮০)

হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো সন্তান মৃত বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করলে আল্লাহ তাদের নেয়ামত ও সুখ-শান্তি আরও বাড়িয়ে দেন। আরেক হাদিসে এসেছে, সন্তানের দোয়ার কারণে মৃত মা-বাবার মর্যাদা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘মানুষের মৃত্যুর পর তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে, হে প্রভু! এটা কী জিনিস? তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে’। (আল-আদাবুল মুফরাদ: ৩৬)

মা-বাবার জন্য ইস্তেগফার

এখানে মৃত মা-বাবার জন্য কোরআনে বর্ণিত তিনটি ইস্তেগফারের দোয়া তুলে ধরা হলো।

১. প্রশান্তির দোয়া: رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا উচ্চারণ: ‘রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)

২. ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া: رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

৩. মা-বাবাসহ সব মুমিনের জন্য ইস্তেগফার: رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا উচ্চারণ: ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনাও ওয়ালিল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাত। ওয়ালা তাজিদিজ জা-লিমিনা ইল্লা তাবারা।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষদের ক্ষমা করুন এবং আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ: ২৮)

যেভাবে ইস্তেগফার করবেন

প্রথমে আল্লাহর প্রশংসামূলক জিকির বা আয়াত পড়ুন। এক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা পাঠ করা উত্তম। এরপর রাসুল (স.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করে মাসনুন দোয়াগুলো পড়ুন। মুখস্থ না থাকলে নিজের ভাষায়ও দোয়া করতে পারেন। আবার দরুদ পাঠ করে দোয়া শেষ করুন। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন কেউ দোয়া করবে, তখন সে যেন তার পবিত্র প্রতিপালকের প্রশংসা বর্ণনাযোগে ও আমার প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করে দোয়া আরম্ভ করে, তারপর যা ইচ্ছা (যথারীতি) প্রার্থনা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৮১; তিরমিজি: ৩৪৭৬)

সন্তানের দোয়া হলো মৃত মা-বাবার রুহের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মা-বাবার জন্য সর্বদা দোয়া করার তাওফিক দিন। আমিন।

আজকের সিলেট/এপি

সিলেটজুড়ে


মহানগর