গোয়াইনঘাটে প্রকাশ্যে লুট হচ্ছে বালু, হুমকিতে পানতুমাই ঝর্ণা
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৭ AM

গোয়াইনঘাটে প্রকাশ্যে লুট হচ্ছে বালু, হুমকিতে পানতুমাই ঝর্ণা

সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা, গোয়াইনঘাট থেকে

প্রকাশিত: ১৪/১০/২০২৫ ০৯:৫২:১৭ AM

গোয়াইনঘাটে প্রকাশ্যে লুট হচ্ছে বালু, হুমকিতে পানতুমাই ঝর্ণা


বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে মেঘালয় এর কোলে এক অসম্ভব সুন্দর গ্রাম পান্থুমাই। এটি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের একটি গ্রাম। পেছনে মেঘালয় পাহাড় এবং বয়ে চলা পিয়াইন নদীর পাড়ে এই গ্রামটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রামগুলোর একটি। এই গ্রামের পাশেই বিশাল ঝর্ণা যার স্থানীয় নাম ফাটা ছড়ির ঝর্ণা বা পানতুমাই ঝর্ণা হিসেবে পরিচিত। কেউ কেউ আবার বড়হিল ঝর্ণা বলেও ডাকেন। ঝর্ণাটি ভারতের মধ্যে পড়লেও পিয়াইন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে খুব কাছ থেকে দেখা যায়। দেশ বিদেশি পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে এই অপরূপ-ঝর্ণার সৌন্দর্য।

ইদানিং স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে ঝর্ণার উৎস মুখ থেকে শুরু করে পিয়াইন নদীর এক থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিম পর্যন্ত চলছে বালু তোলার মহোৎসব। যে যেভাবে পারছে বালু হরিলুট করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সর্বত্র শুধু বালু আর বালু।

কোথাও বাড়ির আঙিনায় কোথাও নদীর পাড় আবার কোথাও কৃষি জমির ওপর শুধু বালুর স্তূপ। এসব বালু বড় বড় ট্রাক ও ট্রাক্টরের মাধ্যমে পরিবহনের ফলে ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভার্ট। হুমকির মুখে পড়ছে পানতুমাই ঝর্ণা ও পিরোজপুর সোনারহাট সড়ক। বালুখেকোরা কোথাও ড্রেজার মেশিন দিয়ে আবার কোথাও নারী-পুরুষসহ শত শত শ্রমিকের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন। সেগুলো স্তূপ করে রেখে রাতে পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। মাঝে মধ্যে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হয় অভিযান।

অভিযানকালে শ্রমিকদের আটক করে সাজা অথবা জরিমানা করা হলেও সিন্ডিকেট চক্রের হোতারা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। যে কারণে থামানো যাচ্ছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, আমরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালানো হচ্ছে। করা হচ্ছে জেল জরিমানা ও মামলা। 

সচেতন মহল বলছেন, প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। 

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সব বালুমহাল ও ছড়া পরিদর্শন করছি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছে। বালু পাচারের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে এবং অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। ইউএনও বলেন,প্রশাসনের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব নয়। স্হানীয়ভাবে সচেতন মহলদের এগিয়ে আসতে হবে। পানতুমাই ঝর্ণা রক্ষায় শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে।

আজকের সিলেট/ডি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর